উদযাপন করেছি এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনকালে জাতিরপিতা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে যে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছিলেন সেখান থেকে আমরা এই উত্তরণ ঘটাই। ২০২৬ সাল থেকে এই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা কার্যকর শুরু হবে।
তিনি বলেন, আমার অবাক লাগে যখন মিলিটারি ডিকটেটররা জনগণের ভোট কারচুপি করে ক্ষমতায় আসতো তখন সেই নির্বাচন নিয়ে যারা কথা বলতো না, আর আজকে যখন আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি, জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি, তখনই আমাদের গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন, নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন। যখন নির্বাচন মানেই ছিল ১০ হোন্ডা, ২০টা গুন্ডা নির্বাচন ঠান্ডা। আজকে আর সেই অবস্থা নেই। জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের হাতে আমরা ফিরিয়ে দিয়েছি। গণতন্ত্রকে সুসংহত করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘদিন গণতান্ত্রিক ধারা অব্যহত আছে বলেই আজকে বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। দারিদ্রের হার কমেছে। মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। মানুষের পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি। চিকিৎসা সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি, সাক্ষরতার হার বেড়েছে। মানুষের ভাগ্যপরিবর্তনে আমরা যে কাজ করেছি তার শুভফল মানুষ পাচ্ছে।
তিনি বলেন, সব দিক থেকে যখন বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, সারাবিশ্ব যেখানে বলে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। তখন আমাদের দেশের ভেতরে কিছু আছে দালাল শ্রেণি আর কিছু বাইরের লোক তাদের চোখে কিছুই ভালো লাগে না। মনে হয় যেন একটা অগণতান্ত্রিক সরকার আসলেই তারা খুশি।
“আমাদের এই সরকারে আসা অত্যন্ত কঠিন কাজ ছিল। বারবার ষড়যন্ত্র চক্রান্ত হতে থাকে। কৃতজ্ঞতা জানাই এদেশের জনগণ প্রতি তারা সকল বাধাবিঘœ উপেক্ষা করেছেন,” বলেন তিনি।
তিনি বলেন, হরতাল, অবরোধ, জ¦ালাও পোড়াও, মানুষ পুড়িয়ে মারা, ট্রেনে আগুন দিয়ে মা ও তাঁর শিশু সন্তানকে পুড়িয়ে মেরেছে, ট্রেনের ফিসপ্লেট খুলে বগি লাইনচ্যুত করে মানুষ হত্যা, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সে হামলা, পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা এগুলো আপনারা দেখেছেন। সেই ২০১৩ ও ১৪ সালের মত ধ্বংসাত্মক কাজ আবারো আমরা দেখলাম। মানুষ যাতে নির্বাচনে ভোট না দেয় সেজন্য লিফলেট বিলী করা ও মানুষকে ভোট থেকে বিরত রাখার চেষ্টাও তারা করেছে (বিএনপি)। আমরা বাধা দেইনি। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সকল বাধা উপেক্ষা করে এই নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করেছে এবং ভোট দিয়েছে আওয়ামী লীগকে। এই নির্বাচনকে তারা গ্রহণ করেছে। এই জন্য আমি জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
তিনি বলেন, “শত বাধা, ভয়-ভীতি, অগ্নি সন্ত্রাস সবকিছু উপেক্ষা করে আজকে তারা নির্বাচন করেছে এবং নিজের ভোট নিজে দিয়েছে। গ্রামে গঞ্জেও স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে মানুষ ভোট দিয়েছে। আমাদের মহিলা ভোটররাও ছুটে এসেছে, ভোট দিয়েছে। এমনকি ১৩০ বছরের এক বুড়িমা পর্যন্ত ভোট দিতে গিয়েছিল।”
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারির প্রসঙ্গ টেনে জাতির পিতার কন্যা বলেন, সেদিন পাকিস্তানি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বঙ্গবন্ধু ফিরে এসেছিলেন। যার মাধ্যমে স্বাধীনতা পূর্ণতা লাভ করে। লন্ডন ও ভারত হয়ে দেশে ফিরেই জাতির পিতা সবার আগে ছুটে গিয়েছিলেন বাংলার মানুষের কাছে। এই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিনি ভাষণ দিয়েছিলেন। যে ভাষণে একটি দেশের ভবিষ্যৎ, উন্নয়ন, সব পরিকল্পনা, দুঃখী মানুষের হাসি ফোটানোর পরিকল্পনা, মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ তিনি তুলে ধরেছিলেন।