আলমগীর হোসেন খান : জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক তৈরীকৃত ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির সংশোধিত ক্লাস রুটিন সহ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা অনুসরনের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে বিগত ২৪-০৪-২০২৩ খ্রি. তারিখ শিঃউঃকাউশিই/৬৮/২০০২(পার্ট-১)/৬৭০ নং স্মারকে প্রেরণ করেছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে তারি আলোকে পরিচালিত হতে।
৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির সেশন রুটিন ব্যবহারের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা নিন্মরুপঃ-
০১. রোল কলের কারণে প্রথম পিরিয়ড হবে ৬০ মিনিটের এবং বাকি পিরিয়ড হবে ৫০ মিনিটের।
০২. প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অবশ্যই সমাবেশে শিক্ষার্থীদের জাতীয় সংগীত গাইবার ব্যবস্থা করবে। এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী শরীর চর্চা, পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন শ্রেণির বিভিন্ন উপস্থাপনা যেমন গান, নাটক, আবৃত্তি, নাচ, প্রভৃতিসহ অন্যান্য আয়োজন করতে পারে। এলক্ষ্যে সমাবেশের সময় বাড়াতে হলে প্রয়োজনে বিদ্যালয় শুরুর সময় এগিয়ে আনা যাবে। কিন্তু কোন মতেই সেশনের সময় কমানো যাবে না।
০৩. রুটিনে উল্লেখিত কোন বিষয়েরই সেশন সংখ্যা বা ক্রম পরিবর্তন করা যাবে না।
০৪. জাতীয় দিবসসমূহ উদযাপন (২১শে ফেব্রুয়ারী, ১৭ই মার্চ, ২৬শে মার্চ, ১লা বৈশাখ, ১লা মে, ১৫ই আগষ্ট, ১৬ই ডিসেম্বর) শিখনকালীন কার্যক্রম হিসেবে ধরা হয়েছে । জাতীয় দিবসে সেশন রুটিন অনুসরণ না করে, দিবস পালনে বিভিন্ন বিষয় সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিষয় শিক্ষকগণ আগে থেকেই পরামর্শ করে শিক্ষক সহায়িকার নির্দেশনা অনুসরণ করে বিদ্যালয়ে জাতীয় দিবসের কার্যক্রম সাজাবেন। যাতে করে এসকল দিবস পালনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের যে অভিজ্ঞতা অর্জন করা প্রয়োজন তা অর্জিত হয়।
০৫. প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকরাই শুধু ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির সেশন পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন। একটি শ্রেণির একটি বিষয়ে একজন শিক্ষককেই দায়িত্ব দেওয়া যাবে। একই শ্রেণির একই বিষয়ে একাধিক শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়া যাবে না। যে শিক্ষক যে বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছেন তাকে সে বিষয়েরই সেশন/শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দিতে হবে।
ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সেশন রুটিন ব্যবহারের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা অনুযায়ী জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২২ অনুযায়ী ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সেশন রুটিন নিম্নরূপঃ
নির্দেশনায় প্রথম পিরিয়ড রোল কলের কারণে ৬০ মিনিট হবে এবং বাকী পিরিয়ড হবে ৫০ মিনিটের। অথচ সেশন রুটিনে প্রথম-দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পিরিয়ড দেখানো হয়েছে ৬০ মিনিটের, বিরতি পিরিয়ড দেখানো হয়েছে ৪৫ মিনিটের এবং চতুর্থ-পঞ্চম ও ষষ্ঠ পিরিয়ড দেখানো হয়েছে ৫০ মিনিটের। যা নির্দেশনার ব্যতিক্রম। সংশোধন করা কিংবা রুটিনের ব্যাখ্যা পাওয়া জরুরী
কোন শ্রেণিতে যে শিক্ষক প্রথম পিরিয়ড ক্লাশ নেন তিনিই শ্রেণি শিক্ষক। তার উপরে অনেক দায়িত্ব-কর্তব্য ঐ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের। প্রাত্যাহিক সমাবেশে শ্রেণি শিক্ষকের নের্তৃত্বে অংশগ্রহন, প্রাত্যাহিক রোল কল, সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহন, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিত একদিনের বেশি হলে খোজখবর নেয়া, পারিবারিক অবস্থা, পিতামাতার সহযোগিতাসহ সকল কিছু শ্রেনি শিক্ষক দায়িত্ব পালন করেন। অথচ ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ক্লাস রুটিনে কোন শ্রেণি শিক্ষক নেই। অর্থাৎ প্রথম পিরিয়ডে সুনির্দিষ্ট একটি বিষয় নেই। একেক দিন একেক বিষয় দেয়া হয়েছে। তাহলে শ্রেণি শিক্ষকের দায়িত্ব কে পালন করবেন।
একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করানো হয়। ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সেশন রুটিন এনসিটিবি কর্তৃক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পেয়েছে। অথচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পড়াচ্ছেন ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত। শ্রেনি সেশন রুটিন সম্পর্কে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সাথে কথা বললে ওনারা এনসিটিবি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে অনুরোধ করেছেন এবং ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শ্রেণি সেশন রুটিনের দাবী করেছেন।
লেখক :
অধ্যক্ষ মোঃ আলমগীর হোসেন খান
শিক্ষক ও কলামিস্ট
Leave a Reply