স্টাফ রিপোর্টার : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় পৌর শহরে ও বড় মাছুয়া ইউনিয়নের খেজুরবাড়িয়া গ্রামের উপকূলীয় শিশুদের জন্য ৪ টি উপকূল পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকের বাইরের বই পড়া থেকে বঞ্চিত শিশু-কিশোরদের উত্তরণে উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে গড়ে তোলা হয়েছে স্কুল ভিত্তিক এ উপকূল পাঠাগারগুলো।
জেলেপল্লীর শিশুদের জীবনমান উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হাতে খড়ি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে এ পাঠাগার। নবনির্মিত এ পাঠাগারকে ঘিরে এখন বই পড়ার আনন্দে মেতেছে ৭ নং খেজুরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৮১ নং উত্তর খেজুরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫৬ নং মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫৯ নং বকসির ঘটিচোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থীরা। দেয়াল পেইন্টিং করা স্কুল ভিত্তিক এক একটি পাঠাগারে শোভা পেয়েছে শতাধিক বই। শিশুতোষ, সাধারণ জ্ঞান, ছোটদের গল্পের বই, ধর্মীয়, সাহিত্য ও বিজ্ঞানসম্মত এসব বই দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রহ করে আসছে সংগঠনের সদস্যরা। এসব বই সংগ্রহের পেছনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে লেখক, কবি ও সাহিত্যানুরাগীরা।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফেরদৌস ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন ৭ নং খেজুরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জীবন অধিকারী। বক্তব্য রাখেন হাতে খড়ি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক রুবেল মিয়া নাহিদ, প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি সুমন মিস্ত্রী সজিব, সাধারণ সম্পাদক সৌরভ হাওলাদার, সহ-সভাপতি সুস্মিতা অধিকারী, আবিদ হাসান সোলায়মান।
সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জানান, স্কুল খোলার দিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শিশুদের জন্য খোলা থাকবে এ পাঠাগার গুলো। শিশুরা বাড়িতে নিয়ে গিয়েও পড়তে পারবে বইগুলো। পাঠ্যবইয়ের বাইরে এসব বই পড়ে শিশুরা জানতে পারবে আরো অনেক কিছু। সবমিলিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে গড়ে ওঠা এ পাঠাগার বইয়ের সাথে শিক্ষার্থীদের বন্ধন আরো দৃঢ় করবে। সেইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের নতুন করে জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধ করার সুযোগ করে দিবে এমনটাই মনে করছেন পাঠাগারের উদ্যোক্তারা।
৭ নং উত্তর খেজুরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী দোলা হালদার বলে, আমাদের স্কুলে পাঠাগার করায় ক্লাসের বইয়ের পাশাপাশি পাঠাগারের বইগুলো পড়ে আমরা আরো অনেক কিছু শিখতে পারবো। এখান থেকে আমরা ছড়া ও গল্পের বই নিতে পারবো। আমরা অনেক খুশি হয়েছি।
মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফেরদৌস ইসলাম বলেন হাতে খড়ি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগগুলো প্রশংসনীয়। তাদের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে জেলে পল্লীর অনেক শিশু ও পরিবার। তাদের এই স্কুলভিত্তিক উপকূল পাঠাগার উদ্যোগটি আমার ভালো লেগেছে।
৭ নং উত্তর খেজুরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জীবন অধিকারী বলেন, হাতে খড়ি ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগটি সত্যিই অনেক ভালো একটি উদ্যোগ। আমাদের বিদ্যালয়ে একটি পাঠাগার স্থাপন করায় আমি এবং আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থী সহ সবাই খুব খুশি হয়েছি। তাদের এই পাঠাগারের মাধ্যমে আমাদের স্কুলের শিশুরা আরো অনেক কিছু শিখতে পারবে।
Leave a Reply